Tuesday, 7 October 2025

মনসামঙ্গল

SEBA CLASS IX BENGALI QUESTION AND ANSWERS, মনসামঙ্গল,


SEBA


মনসামঙ্গল

কবিতাটি মূলত মনসামঙ্গল কাব্যের চিরন্তন বিষাদ এবং লোক-জীবনের দুঃখকে আধুনিক কাব্যের ফ্রেমে ধরেছে কবিতার শুরুতেই শ্রাবণ মাসের অবিশ্রান্ত জলের মধ্যে থাকা সপ্তডিঙা মধুকর এবং বেহুলার চরম যন্ত্রণা ('বেহুলা-যন্ত্রণা') তুলে ধরে কাব্যটির মূল আবহ তৈরি করা হয়েছে এই আবহের মধ্যে প্রাচীন চম্পকনগরীর স্মৃতি এবং বর্তমানে সাধারণ মানুষের দৈন্যদশা ('ছেঁড়া কাঁথা-কানি,' 'কুপিলম্পে রাতকানা নিরক্ষরা বুড়ি') প্রতিফলিত হয়েছে সবচেয়ে মর্মস্পর্শী চিত্র হলো সেই নিরক্ষর বৃদ্ধার, যিনি লখিন্দরের (লখা) মৃত্যুতে কান্নার মধ্য দিয়ে নিজের জীবনের ভয়ংকর সত্যের মুখোমুখি হন এবং নিজের জাল-টানা ছেলের মঙ্গল কামনায় মনসা দেবীর কাছে ব্যাকুল প্রার্থনা জানান অবশেষে, জীবনের গহিন টানে এবং নিয়তির অমোঘ বিধানে 'সায়ের ঝিয়ারি' (বেহুলার প্রতীক) অনন্তের দিকে ভেসে চলেছেন—ঠিক যেমন বংশীদাস (মনসামঙ্গলের অন্যতম কবি) পুরোনো ঐতিহ্যকে স্মরণ করিয়ে বলেছেন যে, এই দুঃখের শেষ এখানে নয়, তা অন্য কোনো 'কালীদহে' (অন্য কোনো গভীর, বিষাদময় স্থানে) অপেক্ষমাণ কবিতাটি শক্তিপদ ব্রহ্মচারীর লেখা

প্রশ্ন - কবিতাটির নাম কী?

উত্তর -  কবিতাটির নাম মনসামঙ্গল

প্রশ্ন - মনসামঙ্গল কবিতাটির কবি কে?

উত্তর -  শক্তিপদ ব্রহ্মচারী

প্রশ্ন - শক্তিপদ ব্রহ্মচারী কত সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং কত সালে মারা যান?

উত্তর - শক্তিপদ ব্রহ্মচারী ১৯৩৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০০৫ সালে মারা যান।

প্রশ্ন - মনসামঙ্গল কবিতায় কোন মাস বা ঋতুর উল্লেখ আছে?

উত্তর - মনসামঙ্গল কবিতায় শ্রাবণ মাসের (বর্ষা ঋতু) উল্লেখ আছে।

প্রশ্ন - মনসামঙ্গল কবিতায় বেহুলার কিসের উল্লেখ আছে?

উত্তর - মনসামঙ্গল কবিতায় বেহুলা-যন্ত্রণার উল্লেখ আছে।

প্রশ্ন - মনসামঙ্গল কবিতায় কোন নৌকা বা ভেলায় ভেসে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর - সপ্তডিঙা মধুকর এবং অনন্ত ভাসানে ভেসে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন - মনসামঙ্গল কবিতায় কোন নগরের উল্লেখ আছে?

উত্তর - চম্পকনগর-এর উল্লেখ আছে।

প্রশ্ন - বুড়ি কার মরণে কাঁদে?

উত্তর - বুড়ি লখার (লখিন্দর) মরণে কাঁদে।

প্রশ্ন - মনসার কাছে কার কুশল চাওয়া হয়েছে?

উত্তর - জাল-টানা ছেলের সর্বাঙ্গ কুশল চাওয়া হয়েছে।

প্রশ্ন - মনসামঙ্গল কবিতায় কোন কবির নাম উল্লেখ করা হয়েছে?

উত্তর - বংশীদাস -এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

১. শূন্যস্থান পূরণ করো

ক. সপ্তডিঙা মধুকর চারিদিকে জল। 

খ. শ্রাবণের অবিশ্রাম মনসামঙ্গল। 

গ. এখনো বুকের দ্বিজ বংশীদাস কহে। 

ঘ. কুপিলম্পে রাতকানা নিরক্ষরা বুড়ি 

২. 'মনসামঙ্গল' কবিতার বিশেষ্য পদগুলো বাছাই করে সাজিয়ে লেখো।

কবিতা থেকে বাছাই করা কিছু বিশেষ্য পদ:

মনসামঙ্গল, সপ্তডিঙা, মধুকর, জল, শ্রাবণ, পাট, ডোবা, বিষধর, ফণা, কাঁথা-কানি, বেহুলা, যন্ত্রণা, কালসন্ধ্যা, গান, সায়ের, ঝিয়ারি, ভাসান, নিছনি, চম্পকনগর, সাতনরী, শিকা, ঘর, কুপিলম্প, বুড়ি, লখা, মরণ, ছেলে, জাল, রাত, মা মনসা, সর্বাঙ্গ, কুশল, গাঙ, গন্ধ, শ্রাবণী, বাতাস, বুক, দ্বিজ বংশীদাস, কালীদহ, ডহর, গহন, টান

৩. 'মনসামঙ্গল' কবিতার বিশেষণ পদগুলো বাছাই করে লেখো।

কবিতা থেকে বাছাই করা কিছু বিশেষণ পদ:

শ্রাবণের (অবিশ্রাম মনসামঙ্গল), অবিশ্রাম (মনসামঙ্গল), পচা (পাটে), এঁদো (ডোবা), বিষধর (ফণা), ছেঁড়া (কাঁথা-কানি), হু হু-করা (কালসন্ধ্যা), কাল (সন্ধ্যা), অনন্ত (ভাসানে), রাতকানা (বুড়ি), নিরক্ষরা (বুড়ি), জাল-টানা (ছেলে), গর্ভিণী (গন্ধ), দিগম্বরী (বাতাসে), দখিনা (বাতাসে), ঘোর লাগা (গহন)

৪. পদ পরিবর্তন করো।

বিশেষ্য পদ                             বিশেষণ পদ 

জল                                        জলীয়/জলময়

বিল                                         বিলে/বিলীয়

যন্ত্রণা                                      যন্ত্রণাময়/যন্ত্রণাদায়ক

গান                                         গায়ক/গেয়ো

ঘর                                          ঘরামি/ঘরোয়া

জাল                                       জালীয়/জালিয়াতি

রাত                                         রাত্তির/রাত্রিগত

গাঙ                                        গাঙের/গাঙাল

দখিনা                                     দক্ষিণ/দাক্ষিণাত্য

৫. আঠ-দশটি বাক্যে উত্তর দাও।

ক. 'মনসামঙ্গল' কবিতা অবলম্বনে শ্রাবণের রূপসৌন্দর্যের বর্ণনা দাও।

'মনসামঙ্গল' কবিতায় শ্রাবণের রূপসৌন্দর্যের চিরায়ত মাধুর্য নয়, বরং এর বিষণ্ণ, আর্দ্র এবং জীবনঘনিষ্ঠ এক চিত্র ফুটে উঠেছে এই ঋতুতে চারিদিকে অবিশ্রাম (বিরতিহীন) বৃষ্টি ঝরে, আর জলে ভেসে চলে সপ্তডিঙা মধুকর শ্রাবণের এই জলভরা পরিবেশে বাংলার লোকজীবনের ছবি আঁকা হয়েছে - যেখানে পচে যাওয়া পাটের স্তূপ, আলো প্রবেশ করে না এমন এঁদো ডোবা সেই ডোবাতে আবার বিষধর ফণা তোলা সাপের আশঙ্কা সন্ধ্যায় হু হু-করা এক কালসন্ধ্যা (বিপদসঙ্কুল সাঁঝবেলা) নেমে আসে এই শ্রাবণের দখিনা বাতাসে যেন গাঙের গর্ভিণী অর্থাৎ নদীর গভীর গন্ধ ভেসে আসে এই শ্রাবণেরই দিগম্বরী (আদুল গা বা উলঙ্গ) রূপ দেখা যায় দখিনা বাতাসে, যা প্রকৃতির এক রুক্ষ অথচ সত্যনিষ্ঠ রূপ তুলে ধরে এই শ্রাবণ মাসেই মনসামঙ্গল গান ভেসে আসে , যা ঐতিহ্য ও বর্তমানের এক সংশ্লেষিত রূপ

খ. 'বেহুলা-যন্ত্রণার' পরিচয় দাও।

'মনসামঙ্গল' কাব্যের নায়িকা বেহুলার যন্ত্রণা বলতে মূলত তাঁর জীবনে নেমে আসা চরম শোক ও সংগ্রামকে বোঝানো হয়েছে বেহুলা ছিলেন উজানী নগরের সায়বেনের কন্যা চাঁদ সদাগরের সপ্তম পুত্র লখিন্দরের সাথে তাঁর বিয়ে হয়, কিন্তু বাসর রাতেই দেবী মনসার কোপে তাঁর স্বামী সর্পাঘাতে মারা যান এই কবিতায়, 'ছেঁড়া কাঁথা-কানি আর বেহুলা-যন্ত্রণা' কথাটি দ্বারা লোকায়ত জীবনের দারিদ্র্য ও দুঃখ-কষ্টের সঙ্গে বেহুলার অসামান্য যন্ত্রণাকে এক করে দেখা হয়েছে। বেহুলার যন্ত্রণা কেবল তাঁর ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, এটি হলো -

  • স্বামী হারানোর গভীর শোক

  • মৃত স্বামীকে ভাসিয়ে নিয়ে অনন্তকাল ভাসানে (বিসর্জনে) যাওয়ার কঠোর সিদ্ধান্ত ও তার বেদনা

  • দেবলোকে গিয়ে নৃত্য-গীতের মাধ্যমে দেবতাদের তুষ্ট করে স্বামীকে বাঁচানোর জন্য এক দুঃসাধ্য সংগ্রামের অঙ্গীকার

  • সমাজের সাধারণ দুঃখ (যেমন: জাল-টানা ছেলের জলে যাওয়া) ও পৌরাণিক দুঃখ (বেহুলার সংগ্রাম) - এই দুইয়ের মধ্যেকার সম্পর্কের প্রতীকী প্রকাশ অর্থাৎ, বেহুলা-যন্ত্রণা এখানে লখিন্দরের মৃতদেহ নিয়ে বেহুলার অনন্ত ভাসানে যাত্রা এবং সমাজের মানুষের চিরকালীন দুঃখ ও বিপন্নতার প্রতীক হয়ে উঠেছে

গ. 'সায়ের ঝিয়ারি' কে? তাঁর অনন্ত ভাসানে যাত্রার বর্ণনা দাও।

'সায়ের ঝিয়ারি' হলেন বেহুলা তিনি ছিলেন উজানী নগরের সায়বেনের কন্যা বা দুহিতা, তাই তাঁকে সায়ের ঝিয়ারি (সায়রের কন্যা) বলা হয়েছে বেহুলা 'মনসামঙ্গল' কাব্যের অন্যতম প্রধান নারী চরিত্র

বেহুলার অনন্ত ভাসানে (বিসর্জনে) যাত্রা হলো তাঁর মৃত স্বামী লখিন্দরের প্রাণ ফিরিয়ে আনার এক অবিস্মরণীয় সংগ্রাম । বিয়ের রাতেই দেবী মনসার অভিশাপে সর্পাঘাতে তাঁর স্বামী লখিন্দর মারা গেলে, বেহুলা মৃত স্বামীর প্রাণ ফিরিয়ে আনার জন্য দেবলোকে গমনের সিদ্ধান্ত নেন । কবিতাটিতে এই যাত্রাকে এক হু হু-করা কালসন্ধ্যায় (বিপদসঙ্কুল সাঁঝবেলা) ভেসে আসা গানের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে । তাঁর এই যাত্রা ছিল 'ডহরের ঘোর লাগা গহনের টানে', অর্থাৎ নৌকোর খোল, খাল বা গভীর জলাশয়ের নিবিড় আকর্ষণে। এটি সাধারণ বিসর্জন নয়, বরং দেবলোকে পৌঁছনোর এক অনিশ্চিত ও সুদূর পথ

বেহুলার এই যাত্রা কেবল স্বামীর প্রাণ ফিরিয়ে আনার জন্য ছিল না, এটি ছিল নারীর সতীত্ব, সাহসিকতা এবং মনসা দেবীর আধিপত্যের বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিরোধের এক অনন্ত সংগ্রাম তিনি মৃত স্বামীকে ভাসিয়ে নিয়ে এক অনন্ত ভাসানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন

৬. রচনাধর্মী উত্তর লেখো।

ক. 'মনসামঙ্গল' কবিতাটির ভাবার্থ লেখো।

শক্তিপদ ব্রহ্মচারীর লেখা 'মনসামঙ্গল' কবিতাটি বাংলার লোকপুরাণ ও সমকালীন গ্রামীণ জীবনের জটিলতাকে এক বিন্দুতে মিলিয়ে এক অসাধারণ সাহিত্য সৌন্দর্যে মণ্ডিত হয়েছে

কবিতার মূল ভাব হলো লোকায়ত মনসাগাথা (মনসামঙ্গল কাব্য) এবং আধুনিক জীবনের দুঃখ-কষ্টের এক সংশ্লেষিত রূপ একদিকে যেমন চাঁদ সদাগরের সপ্তডিঙা মধুকর, চম্পকনগর এবং বেহুলা-লখিন্দরের কাহিনি এসেছে , তেমনি অন্যদিকে পচা পাটে এঁদো ডোবা, ছেঁড়া কাঁথা-কানি, কুপিলম্পে রাতকানা নিরক্ষরা বুড়ি এবং জাল-টানা ছেলের জীবনের দৈনন্দিন সঙ্কট উপস্থিত

শ্রাবণের অবিশ্রাম বৃষ্টির আবহাওয়াটি এক বিষণ্ণ ও বিপদসঙ্কুল পটভূমি তৈরি করেছে এই পরিবেশে হু হু-করা কালসন্ধ্যায় ভেসে আসা মনসামঙ্গলের গান যেন সাধারণ মানুষের জীবনের বেহুলা-যন্ত্রণা লখিন্দরের জন্য কান্নার পাশাপাশি বুড়ির জাল-টানা ছেলের কুশল কামনায় মনসার কাছে প্রার্থনা এই কথাই বলে যে, সাধারণ মানুষ তাদের দৈনন্দিন সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতে আজও লোকদেবতার শরণাপন্ন

কবিতাটি অতীত ঐতিহ্যের প্রতি কবির ভালোবাসা প্রকাশ করে। দ্বিজ বংশীদাসের উক্তির ব্যবহার করে কবি বলেছেন, "হেথা নয়, হেথা নয়, অন্য কালীদহে..." অর্থাৎ, জীবন ও মুক্তির প্রকৃত কালীদহ (ভারতীয় পুরাণে বর্ণিত জলাশয়) বা শান্তি হয়তো অন্য কোথাও, এই কঠিন বাস্তবতার মধ্যে নেই।

কবিতার শেষাংশ, "সায়ের ঝিয়ারি যায় অনন্ত ভাসানে", এই ভাবার্থকে সম্পূর্ণতা দেয়। এই যাত্রা হলো দুঃখ থেকে মুক্তি ও অন্বেষণের যাত্রা। সামগ্রিকভাবে, কবিতাটি বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং জীবন সংগ্রামের এক করুণ, গভীর ও নিবিড় প্রতিচ্ছবি

৭. তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।

ক. সায়ের ঝিয়ারি যায় অনন্ত ভাসানে।

এই লাইনটি কেবল মনসামঙ্গল কাব্যের একটি ঘটনার বর্ণনা নয়, এটি হলো - মৃত্যু এবং দেবীর অভিশাপের বিরুদ্ধে বেহুলার অসীম সতীত্ব ও সাহসিকতার প্রতীক। গ্রামীণ জীবনে নেমে আসা সীমাহীন যন্ত্রণা ও সংগ্রামের চিরন্তন প্রতিচ্ছবি। উদ্ধৃত লাইনটি এই কঠিন বাস্তব জগৎ ছেড়ে এক বৃহত্তর বা আধ্যাত্মিক মুক্তির জন্য মানুষের সুদূর যাত্রা বা অন্বেষণকে নির্দেশ করে।

খ. ছেঁড়া কাঁথা-কানি আর বেহুলা-যন্ত্রণা।

এই পংক্তিটি লোকজীবন ও পৌরাণিক দুঃখকে একই বন্ধনে এনেছে।

'ছেঁড়া কাঁথা-কানি' বাংলার গ্রামীণ জীবনের দারিদ্র্য, অভাব এবং সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন কষ্টের প্রতীক । এটি যেন জীর্ণ, ভেঙে পড়া জীবনের প্রতিচ্ছবি। 
'বেহুলা-যন্ত্রণা' হল পৌরাণিক নারী চরিত্র বেহুলার চরম ব্যক্তিগত দুঃখ (বাস্তব ও দৈব আঘাতজনিত স্বামী হারানোর শোক) এবং তার অসীম সংগ্রামের প্রতীক
কবি এই উপমার মাধ্যমে দেখিয়েছেন যে, সাধারণ মানুষের জীবনের জীর্ণতা (ছেঁড়া কাঁথা-কানি) এবং তাদের অনিবার্য দুঃখ-কষ্ট (জাল-টানা ছেলের জলে যাওয়া, রাতকানা বুড়ির কান্না) পৌরাণিক ট্র্যাজেডি বেহুলার যন্ত্রণার মতোই গভীর, ব্যাপক ও চিরন্তন এটি লোকায়ত জনজীবন এবং নাগরিক মানসের জটিলতার মিশেল

গ. গাঙের গর্ভিণী সেই গন্ধ ভেসে আসে।

এই পংক্তিটিতে প্রকৃতির গভীরতা ও জীবনশক্তির ইঙ্গিত রয়েছে। গাঙ মানে নদী গর্ভিণী শব্দটি এখানে নদীর জল ও পলিমাটিতে জমা হওয়া উর্বরতা, গভীরতা এবং জীবনের সজীবতার প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এটি নদীকে যেন এক জীবনদাত্রী মাতৃরূপে কল্পনা করেছে । এখানে যে গন্ধের কথা বলা হয়েছে এই গন্ধ কোনো সাধারণ গন্ধ নয়; এটি হলো বর্ষার জলে নদী যখন পূর্ণ হয়, সেই জলের, পলিমাটির ও জলজ উদ্ভিদের এক নিবিড়, গভীর ও আদিম গন্ধ - যা প্রকৃতি ও জীবনের মূল উৎসকে স্মরণ করিয়ে দেয়

পংক্তিটি শ্রাবণের আবহাওয়ায় প্রকৃতির নিবিড় সংযোগ এবং জীবনের উৎসের দিকে ফিরে তাকানোর কথা বলে। এটি বাংলার উর্বরতা, ঐতিহ্য এবং নদীমাতৃক সংস্কৃতির এক গভীর, স্পর্শযোগ্য অনুভূতি জাগায়

ঘ. শ্রাবণীর দিগম্বরা দখিনা বাতাসে।

এই পংক্তিটিতে শ্রাবণ মাসের এক অন্যরকম, উন্মুক্ত রূপ প্রকাশ পেয়েছে।

সাধারণত শ্রাবণের রূপ স্নিগ্ধ ও শ্যামল, কিন্তু এখানে কবি দিগম্বরী শব্দটি ব্যবহার করে শ্রাবণকে এক আবরণহীন, রুক্ষ ও তীব্র সত্যের রূপে তুলে ধরেছেন এই দখিনা বাতাসে জীবনের কঠিন বাস্তবতা এবং বেহুলা-যন্ত্রণার মতো ট্র্যাজেডি যেন আরও স্পষ্ট ও উন্মুক্তভাবে ভেসে আসে এটি বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে মিশে থাকা কঠিন অথচ সত্য জীবনের এক আধুনিক দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপনা


Rajesh Konwar

Author & Editor

Has laoreet percipitur ad. Vide interesset in mei, no his legimus verterem. Et nostrum imperdiet appellantur usu, mnesarchum referrentur id vim.

0 comments:

Post a Comment