Saturday, 4 September 2021

অরুণিমা সিনহা

ড. জয়শ্রী গোস্বামী মহন্তের জন্ম ১লা জানুয়ারি ১৯৬০ ইংরাজি। তার পৈত্রিক বাসভূমি আসাম প্রদেশের ধুবড়ী জেলার গৌরীপুরে।জয়শ্রী গোস্বামী মহন্তের প্রাথমিক শিক্

 অরুণিমা সিনহা

ARUNIMA SINHA

লেখক পরিচিতি

ড. জয়শ্রী গোস্বামী মহন্তের জন্ম ১লা জানুয়ারি ১৯৬০ ইংরাজি। তার পৈত্রিক বাসভূমি আসাম প্রদেশের ধুবড়ী জেলার গৌরীপুরে।জয়শ্রী গোস্বামী মহন্তের প্রাথমিক শিক্ষা গৌরীপুরে। ছাত্রী অবস্থায় তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। গুয়াহাটির কটন কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে বি. এস. সি. পাশ করে গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে জীববিদ্যা বিষয়ে প্রথম বিভাগে প্রথম হয়ে এম. এস. সি. পাশ করেন। তার কর্মজীবন শুরু হয় অধ্যাপিকারূপে প্রথমে কটন কলেজে। সেখান থেকে গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপিকা হন তিনি। আসামের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল কুমার মহন্তের সাথে তিনি পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হয়ে নিজেকে সমাজসেবার কাজে নিয়োজিত করেন। তিনি এ. জি. পি. দলের অন্যতম নেত্রী। তিনি রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। লেখিকা হিসেবে তিনি তুলনামূলকভাবে নবীন হলেও তার লেখার অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। তিনি ৬৫টিরও বেশি গ্রন্থের লেখিকা। ‘এদিন’ সংবাদপত্রের মুখ্য সম্পাদিকা। তার রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে ‘সাধু’, ‘আসাম আন্দোলন পার্ট – ৭’, ‘দ্রোণাচার্য’, ‘চাণক্য’ ইত্যাদি প্রধান। তিনি ভারত সরকারের দ্বারা ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত।

অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরঃ 

প্রঃ 'অরুণিমা  সিনহাঃ আত্মবিশ্বাস ও সাহসের অন্য নাম' রচনাটির লেখিকার নাম কী?

উত্তরঃ ড. জয়শ্রী গোস্বামী মহন্ত।

প্রঃ 'অরুণিমা  সিনহাঃ আত্মবিশ্বাস ও সাহসের অন্য নাম' রচনাটি কোন ভাষার সাহিত্য থেকে অনুবাদিত?

উত্তরঃ অসমীয়া ভাষার সাহিত্য থেকে।

প্রঃ ড. জয়শ্রী গোস্বামী মহন্ত কোন পত্রিকার সম্পাদিকা ছিলেন?

উত্তরঃ 'এদিন' সংবাদ পত্রিকার। 

প্রঃ 'অরুণিমা  সিনহাঃ আত্মবিশ্বাস ও সাহসের অন্য নাম' রচনাটির বাংলা  ভাষায় কে অনুবাদ করেছিলেন?

উত্তরঃ মিলন উদ্দিন লস্কর।

প্রঃ লেখিকা ড. জয়শ্রী গোস্বামী মহন্ত ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোন সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন?

উত্তরঃ পদ্মশ্রী সম্মানে। 

প্রঃ লেখিকা ড. জয়শ্রী গোস্বামী মহন্ত কত খ্রিস্টাব্দে পদ্মশ্রী সম্মান লাভ করেছিলেন?

উত্তরঃ ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে।

প্রঃ লেখিকা ড. জয়শ্রী গোস্বামী মহন্তের জন্মস্থান কোথায়?

উত্তরঃ ধুবড়ী জেলার গৌরীপুরে।

প্রঃ অরুণিমা রেলগাড়িতে চড়ে কোথায় যাচ্ছিল?

উত্তরঃ দিল্লী যাচ্ছিল। 

প্রঃ অরুণিমার বয়স কত ছিল?

উত্তরঃ ছাব্বিশ বছর।

প্রঃ অরুণিমা কোন খেলায় পারদর্শী ছিল?

উত্তরঃ ভলিবল খেলায়।

প্রঃ কখন অরুণিমার হিমালয়ে হিমালয় শিখরে ওঠার স্বপ্ন তীব্র হয়ে উঠেছিল?

উত্তরঃ All India Institute of Medical Science এ চিকিৎসারত থাকা কালে অরুণিমার হিমালয়ে হিমালয় শিখরে ওঠার স্বপ্ন তীব্র হয়ে উঠেছিল। 

প্রঃ ডাকাতদল অরুণিমার কাছে এসে কী দিতে বলেছিল?

উত্তরঃ অরুণিমার গলার চেন।

প্রঃ অরুণিমার গলার চেনটিতে কার দেওয়া আশীর্বাদ ছিল?

উত্তরঃ অরুণিমার মায়ের। 

প্রঃ ডাকাতদল অরুণিমাকে কোথায় ছুড়ে দিয়েছিল?

উত্তরঃ রেলগাড়ি থেকে দরজা খুলে বাইরে ছুড়ে দিয়েছিল।

প্রঃ অরুণিমার চিৎকার কেউ শুনল না কেন?

উত্তরঃ রেল ইঞ্জিন ও তার চাকার শব্দে কেউ অরুণিমার চিৎকার শুনতে পেল না।

প্রঃ ভোরবেলা লোকজন অরুণিমাকে কীভাবে দেখতে পেল?

উত্তরঃ গুরুতর আহত অবস্থায়।

প্রঃ অরুণিমাকে আহত অবস্থায় প্রথমে কোন হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল?

উত্তরঃ বেরিলি হাসপাতালে। 

প্রঃ হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে অরুণিমা প্রথমে কার কাছে গিয়েছিল?

উত্তরঃ এভারেস্ট বিজয়ী বাচেন্দ্রী পালের কাছে।

প্রঃ ভারতবর্ষের প্রথম এভারেস্ট বিজয়ী মহিলার নাম কী?

উত্তরঃ বাচেন্দ্রী পাল।

প্রঃ অরুণিমার নতুন কৃত্রিম পা লাগাতে কত টাকার প্রয়োজন ছিল?

উত্তরঃ ষাট - সত্তর হাজার টাকার প্রয়োজন ছিল?

প্রঃ কার তত্বাবদানে অরুণিমার পর্বত আরোহনের অনুশীলন চলছিল?

উত্তরঃ এভারেস্ট বিজয়ী বাচেন্দ্রী পালের তত্বাবদানে। 

প্রঃ অরুণিমা কোথা থেকে প্রথমে এভারেস্ট অভিযান শুরু করেছিল?

উত্তরঃ লাদাখের শামসের কাংরি থেকে। 

প্রঃ যাত্রা করে কতদিন পর অরুণিমা এভারেস্ট শিখরে পদার্পণ করতে সক্ষম হয়েছিল?

উত্তরঃ ৫২ দিন পর। 

প্রঃ অরুণিমা কতক্ষণ এভারেস্টের চুড়ায় অবস্থান করেছিল?

উত্তরঃ প্রায় দেড় ঘণ্টার মত সময়। 

প্রঃ অরুণিমা কার কাছ থেকে পদ্মশ্রী সম্মান লাভ করেছিল?

উত্তরঃ ভূতপূর্ব রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে।

প্রঃ অরুণিমার বাড়ি কোথায়?

উত্তরঃ উত্তর প্রদেশে। 

প্রঃ স্তিফেন হাকিঙ কে ছিলেন?

উত্তরঃ একজন পৃথিবী বিখ্যাত মহাকাশ গবেষক ও বিজ্ঞানী ছিলেন। 

সংক্ষিপ্ত উত্তরঃ

প্রঃ ড. জয়শ্রী গোস্বামী মহন্ত কত সালে কোন সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন?

উত্তরঃ লেখিকা ড. জয়শ্রী গোস্বামী মহন্ত ২০১৮ সালে ভারত সরকার কর্তৃক 'পদ্মশ্রী' সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন।

প্রঃ অরুণিমা কেন ডাকাতদের হাতে তার সোনার চেন দিতে চায় নি?

উত্তরঃ অরুণিমা এক সাহসী যুবতী। সে প্রথমত অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে চেনটি দেয় নি। দ্বিতীয়ত, এটাতে তার মায়ের আশীর্বাদ জড়ানো ছিল। এজন্য সে ডাকাতদের হাতে চেন দিতে চায় নি। 

প্রঃ অরুণিমা প্রথমে কোন পর্বতে আরোহণ করেছিলেন? তার উচ্চতা কত?

উত্তরঃ অরুণিমা প্রথমে লাদাখে অবস্থিত শামসের কাংরিতে আরোহণ করেছিলেন। তার উচ্চতা ছিল ২১৭১৮ ফুট। 

প্রঃ কোন ক্রিকেটার অরুণিমাকে বিশেষ অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন? তিনি নিজে কোন অসুখে ভোগছিলেন?

উত্তরঃ ক্রিকেটার যুবরাজ সিং। তিনি ক্যান্সারে ভোগছিলেন।

প্রঃ অরুণিমা যে রেলগাড়িতে চড়ে ছিল, সেটি কোথা থেকে কোথা আসছিল?

উত্তরঃ অরুণিমা যে রেলগাড়িতে চড়ে ছিল, সেটি লখনউ থেকে দিল্লি অভিমুখে আসছিল।

প্রঃ অরুণিমার বাড়ি কোথায় ছিল? ডাকাতরা তার সঙ্গে যে ঘটনাটি করল সেটা কত সালে?

উত্তরঃ অরুণিমার বাড়ি উত্তর প্রদেশে। ডাকাতরা তার সঙ্গে যে ঘটনাটি করল সেটা ২০১১ সালে।

প্রঃ অরুণিমা কত ঘণ্টা সময় রেললাইনের কাছে পড়েছিল এবং সে সময়সীমায় কতটি রেলগাড়ি ঐ লাইনে অতিক্রম করেছিল?

উত্তরঃ অরুণিমা প্রায় সাত ঘণ্টা সময় রেললাইনের কাছে পড়েছিল। সে সময়সীমায় ঐ লাইন দিয়ে ৩৯ টি রেলগাড়ি অতিক্রম করেছিল। 

প্রঃ অরুণিমার কষ্টকর দিনগুলিতে মনোবল অটুট রেখে এগিয়ে যেতে কারা সহায়তা করেছিল?

উত্তরঃ অরুণিমার বয়ন এবং এভারেস্ট বিজয়ী বাচেন্দ্রী পাল।

প্রঃ এভারেস্ট বিজয়ের জন্য ভারত সরকার অরুণিমাকে কত সালে এবং কোন সম্মানে ভূষিত করেছিল?

উত্তরঃ এভারেস্ট বিজয়ের জন্য ভারত সরকার অরুণিমাকে ২০১৫ সালে 'পদ্মশ্রী' সম্মানে ভূষিত করেছিল। 

প্রঃ এভারেস্টের চূড়ায় উঠার পরই অভিযাত্রীদের কেন তাড়াতাড়ি অবতরণ করতে হয়?

উত্তরঃ এভারেস্টের চূড়ায় উঠার সঙ্গে সঙ্গেই অনেক অভিযাত্রীদের সঙ্গে নেওয়া অক্সিজেন শেষ হওয়ার পথে থাকে। আর অক্সিজেন শেষ হয়ে গেলে তাদের প্রাণ নাশের আশঙ্কা থাকে। তাই এভারেস্টের বুকে পা রেখেই তারা দ্রুত নেমে আসতে বাধ্য হয়। 

প্রঃ অরুণিমা দেশের অন্যান্য মহিলাদের উদ্দেশ্যে কী বলেছিল?

উত্তরঃ এভারেস্ট জয়ের পর অরুণিমার উচ্ছ্বসিত বাণী ছিল যে এদেশের বুকে তার মতো লক্ষ লক্ষ মহিলা আছেন যাদের মধ্যে লুকিয়ে আছে প্রতিভা, সে প্রতিভা বিকাশের জন্য দরকার সামান্য আশ্বাস আর সহায়তা। তার নিজের ভাষায়, 'আমি মাত্র একজন অরুণিমা নই, আমার মতো হাজার হাজার অরুণিমা রয়েছে। আপনারা তাদের চিহ্নিত করে জীবনের পথে এগিয়ে যেতে, সাফল্য পেতে প্রেরণা দিলে সত্যিকার অর্থে দেশের কাজ হবে।'

প্রঃ অরুণিমা কোথা থেকে যাত্রা শুরু করে কতদিন পর হিমালয়ের চূড়ায় উঠেছিল?

উত্তরঃ অরুণিমা নেপালের কাঠমান্ডু থেকে যাত্রা শুরু করে ৫২ দিন পরে হিমালয়ের চূড়ায় উঠেছিল।

প্রঃ অরুণিমা কখন এবং কত মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এভারেস্টে পদার্পণ করতে সক্ষম হয়?

উত্তরঃ রাত ৮ টায় ৮৮৪৮ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এভারেস্ট শৃঙ্গের শিখরে পদার্পণ করতে সক্ষম হয়। তারিখটি ছিল ২১ মে ২০১৩ খ্রিঃ ।

ছোট প্রশ্নঃ

প্রঃ অরুণিমা কী কী সম্মান লাভ করেছিল?

উত্তরঃ অরুণিমা তার দুঃসাহসিক এভারেস্ট অভিযানের জন্য ভারত সরকার প্রদত্ত 'পদ্মশ্রী' সম্মান লাভ করে ২০১৫ সালে। এই বছরই অর্থাৎ ২০১৫ সালে 'তেনজিং নোরগে' সম্মান লাভ করে। তাছাড়া ২০১৪ সালে সে ভূতপূর্ব রাষ্ট্রপতি ডঃ এ পি জে আব্দুল কালামের নিকট থেকে 'আমেজিং ইন্ডিয়ান অ্যাওয়ার্ড' লাভ করে। 

প্রঃ কারা কারা অরুণিমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছিল?

উত্তরঃ জারা অরুণিমাকে তার স্বপ্ন এভারেস্ট বিজয়ে অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে সর্বপ্রথমে উল্লেখ করা যায় - এভারেস্ট বিজয়িনী বাচেন্দ্রী পালের নাম যিনি মেয়েটির চোখের স্বপ্ন, চ্যালেঞ্জ এবং আত্মপ্রত্যয় দেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।

তার মনোবল আরও বাড়িয়ে দিয়েছিলেন যিনি তিনি হলেন ক্যান্সার আক্রান্ত প্রখ্যাত ক্রিকেটার যুবরাজ সিং। তাছাড়া, তার বোনও মনোবল অটুট রেখে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা দিয়েছিল। 

প্রঃ স্তিফেন হকিং কে? তার কী অসুবিধা ছিল?

উত্তরঃ স্যার স্তিফেন উইলিয়াম হকিং ছিলেন পৃথিবী বিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী এবং গণিতজ্ঞ। তিনি মোটর নিউরন রোগে আক্রান্ত হয়ে হুইল চেয়ারে শায়িত ছিলেন। এ অবস্থায়ও সাফল্য সহকারে তিনি তাঁর গবেষণা চালিয়ে গিয়েছিলেন। 

প্রঃ 'আমাদের অবাধ্য হবার পরিণতি কী হতে পারে জানিস?' উক্তিটি কার? কার প্রতি করেছে? প্রসঙ্গটি উল্লেখ করো।

উত্তরঃ উক্তিটি চলন্ত ট্রেনের ডাকাত দলের। তারা সাহসী যুবতী অরুণিমার প্রতি এই উক্তিটি করেছিল। উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা অরুণিমা একবার লখনউ থেকে দিল্লীগামী ট্রেনে যাত্রা করছিল। অরুণিমা জে কামরায় উঠেছিল সে কামরায় আচমকা একদল ডাকাতের আবির্ভাব ঘটে। অরুণিমা ছাড়া বাকি যাত্রীরা ভয়ে নির্বিবাদে নিজেদের গয়না গাঁটি সমঝে দিয়ে প্রাণভিক্ষা চেয়েছিল। একমাত্র ব্যতিক্রমী ছিল অরুণিমা। তাই ডাকাতদল তাকে এভাবে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। 

প্রঃ দিল্লির All India Institute of Medical Science এ চিকিৎসারত থাকাকালে অরুণিমার এই দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে কারা কী মন্তব্য করেছিল?

উত্তরঃ হাসপাতালে থাকাকালে অরুণিমার সাহসী পদক্ষেপের কথা কেউ জানতে পারে নি। তাই তারা বাহবা না দিয়ে উলটো কেউ কেউ বলেছে - টিকিট ছাড়া ভ্রমণ করেছিল বলে টিটি যখন তার কাছে টিকিট চেয়েছিল তখনই সে কামড়া থেকে ঝাপ দিয়েছিল। আবার কেউ বা বলল অন্য কারণে অরুণিমা আত্মহত্যা করার জন্য রেললাইনে গিয়েছিল ইত্যাদি নানা কথা। 

প্রঃ 'তিনিই তাকে সঠিক পথ দেখিয়ে পরামর্শ দিতে পারবেন।' তিনি কে? কাকে, কিসের পথ দেখিয়ে দিতে পারবেন?

উত্তরঃ এখানে তিনি বলতে প্রথম এভারেস্ট বিজয়িনী বাচেন্দ্রী পালের কথা বলা হয়েছে। কাকে বলতে অরুণিমা সিনহার কথা বলা হয়েছে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকার সময় অরুণিমার হিমালয়ের শিখরে চড়ার স্বপ্ন তীব্র হয়েছিল। অরুণিমা মনে মনে স্থির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে বাচেন্দ্রী পালের সাহায্য পেলে সে তার স্বপ্নকে সাকার করতে পারবে। 

প্রঃ 'তার আকাঙ্ক্ষা দেখে অনেকেই তাকে পরামর্শ দিয়ে বলেছিলেন।' কারা তাকে কী পরামর্শ দিয়েছিল?

উত্তরঃ এখানে অরুণিমা সিনহার আকাঙ্ক্ষার কথা বলা হয়েছে। 

বিকলাঙ্গ অরুণিমার উচ্চ আশা দেখে অনেকে তাকে পরামর্শ দিয়ে বলেছিল, একটি কৃত্রিম পা আর অন্যটি থেকেও না থাকার মত, পর্বত আরোহণ যা অতি কঠিন কৌশল এবং পরিশ্রম সাপেক্ষ ব্যাপার, তাতে এরকম অবস্থায় সাফল্য লাভ করা অরুণিমার পক্ষে সম্ভব হবে না। তারা আরও বলেছিল, কঠিন কাজে অগ্রসর হওয়া আর জীবনকে বিপন্ন করা একই কথা হবে। 

প্রঃ যুবরাজ সিং এর মানসিক শক্তির উদাহরণ অরুণিমার লক্ষ্যে পৌঁছাতে কীভাবে সাহায্য করেছিল?

উত্তরঃ পাঞ্জাববাসী যুবরাজ সিং একজন বিখ্যাত ক্রিকেটার। তিনি ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এই মারণ ব্যাধি হলে মানুষ সাধারণত জীবনের আশা ছেড়ে মনোবল ভেঙ্গে ফেলে। কিন্তু যুবরাজ সিং এর ব্যতিক্রম। সে তার অদম্য মানসিক শক্তিতে সেই মারণ ব্যাধি থেকে আরোগ্য লাভ করে এবং জীবনে সফলতা লাভ করে।

অরুণিমার চোখের সামনে ছিল যুবরাজের সেই ছবি। যুবরাজ তাকে দেখিয়ে দিয়েছিলেন যে মনের বল আর আত্মবিশ্বাস থাকলে শারীরিক বাধা অন্তরায় সৃষ্টি করতে পারে না। 

প্রঃ টীকা লেখোঃ 

(ক) স্তিফেন হকিং - কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্তিফেন হকিং ১৯৪২ সালের জানুয়ারী মাসের ৮ তারিখ ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে জন্মগ্রহণ করেন। তাত্বিক পদার্থ বিজ্ঞানী ও গণিতজ্ঞ হিসাবে তিনি বিখ্যাত। কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ২০০৯ সালের ১ অক্টোবর অবসর নেন।

মোটর নিউরন রোগে ভুগে শারীরিকভাবে অচল হয়ে হুইল চেয়ারে শায়িত হওয়া সত্ত্বেও হকিং বহু বছর সাফল্যের সঙ্গে গবেষণা চালিয়ে যান। 'ব্রিফ হিস্টরি অব টাইম' উনার অন্যতম শ্রেষ্ঠ বই। 'ব্ল্যাকহোল' গবেষণার জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন। ১৪ই মার্চ ২০১৮ সালে তিনি পরলোক গমন করেন।

(খ) একলব্য - মহাভারতে বর্ণিত এক নিষাদ সন্তান একলব্য। সে গিয়াছিল গুরু দ্রোণাচার্যের কাছে ধনুর্বিদ্যা শিখতে, কিন্তু গুরু দ্রোণাচার্য তাকে নীচ জাতির বলে প্রত্যাখ্যান করেন। একলব্য কিন্তু গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা হারায় নি। সে জঙ্গলে এসে গুরু দ্রোণাচার্যের মূর্তি তৈরি করে তারই সম্মুখে তীর চালানো বিদ্যা অভ্যাস করতে লাগল। শেষ পর্যন্ত সে নিজের সাধনা ও একাগ্রতার বলে সিদ্ধি লাভ করে। সে শব্দভেদী বাণ নিক্ষেপ করে সকলকে তাক লাগিয়ে দেয়। গুরুদক্ষিণা স্বরূপ নিজের বুড়ো আঙ্গুল দান করে সে স্মরণীয় হয়ে আছে। 

(গ) তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন - মহাভারতে বর্ণিত হস্তিনাপুরের রাজা পাণ্ডুর তৃতীয় পুত্র অর্জুন। তিনি পৃথিবী বিখ্যাত ধনুর্ধর। অর্জুন গুরু দ্রোণাচার্যের প্রিয় শিস্য ছিলেন। একলব্যকে শব্দভেদী বাণ নিক্ষেপ করতে দেখে গুরু দ্রোণাচার্যের উপর অর্জুনের ভীষণ অভিমান হয়। তাই অর্জুন এই বিদ্যা আয়ত্ব করতে সারারাত ঘন অন্ধকারের মধ্যে ধৈর্যের সহিত গভীর অরণ্যে শব্দ অনুসরণ করে তীর ছোড়ার অভ্যাস করে শব্দভেদী বাণ নিক্ষেপ করার দক্ষতা লাভ করেছিলেন।   

প্রঃ অরুণিমা কোন ঘটনায় পা হারিয়েছিলেন? এই ঘটনা কি তাকে তার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করতে পেরেছিল?

উত্তরঃ লখনউ থেকে দিল্লীগামী ট্রেনে অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে সফরকালীন অরুণিমা ডাকাত দলের খপ্পরে পড়ে। ডাকাতের হুমকিতে ভয় পেয়ে অন্যান্য যাত্রীরা যখন প্রাণের ভয়ে নিজ নিজ টাকা কড়ি সহ গয়নাগাটি ডাকাতদের হাতে তুলে দেয়, তখন অসীম সাহসিনী ছাব্বিশের যুবতী অরুণিমা ডাকাতদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ায়। ডাকাতদের হুশিয়ারে সাড়া না দেওয়ায় ওরা অরুণিমাকে চলন্ত ট্রেনের দরজা খুলে চ্যাংদোলা করে বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। এ ঘটনায় অরুণিমা তার পা হারায়।

অরুণিমাকে ডাকাতদল বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিলে বিপরীতগামী ট্রেনে ধাক্কা লেগে সে মাটিতে অচেতন হয়ে পড়ে। ভোরবেলা লোকেরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বরেলি হাসপাতালে এবং পড়ে দিল্লীর 'All India Institute of Medical Science' এ ভর্তি করে। সেখানে নানা লকের কাছ থেকে রোগীর বিছানায় শুয়ে শুয়ে নানা বিরূপ মন্তব্য শুনতে পায়। এটা তার আত্মবিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করে তোলে। হাসপাতালের শয্যা থেকেই সে হিমালয় জয়ের কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়। তার দুর্ঘটনাজনিত পা হারানোর যন্ত্রণাও তাকে লক্ষ্যচ্যুত করতে পারে নি। 

প্র: পর্বত অভিযানে অরুণিমা কি ৰাধাবিপত্তি অতিক্রম করেছিল? অথবা, যে ঘটনায় অরুণিমা সিন্হা তার পা হারিয়েছিলেন তা বিশদভাবে বর্ণনা করো। 

উত্তর : এভারেস্টের শিখরে ফটো তোলার জন্য ভিডিও সহযোগে বিশ্ববাসীকে বিরল অভিজ্ঞতার বিষয়ে জানানোর জন্য সে দুইটি ক্যামেরা সঙ্গে নিয়েছিল। নিয়েছিল জল ও অক্সিজেন। 

চার নং ক্যাম্পে পৌঁছানোর সময় দুটি পা হতে রক্ত বের হয়ে ভয়ঙ্কর অবস্থা হয়েছিল। সঙ্গী শেরপা অরুণিমাকে বারবার সতর্ক করে দিয়েছিল, যে কোনো সময় অক্সিজেন শেষ হয়ে যেতে পারে। তখন মৃত্যুকে ডাকা ছাড়া অন্য উপায় থাকবে না। কিন্তু অরুণিমার একটাই কথা এতদুর এসে ফিরে যাবার কোনো মানে হয় না। অদম্য সাহস ও উৎসাহ নিয়ে সে অগ্রসর হয়েছিল। রক্ত বের হওয়া দুটি পা নিয়ে অতি কষ্টে অগ্রসর হচ্ছিল। পথে চোখে অনেক মৃতদেহ সে দেখতে পেয়েছিল। কিন্তু কিছুই তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। কাঠমান্ডু হতে যাত্রা শুরু করে ৫২ দিনের পর অবশেষে রাত ৮ টায় ৮৮৪৮ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত মাউন্ট এভারেস্টের শিখরে পদার্পণ করতে সক্ষম হয়েছিল। 

প্র: অরুণিমার এভারেস্ট বিজয়ের বর্ণনা দাও। 

অথবা

অরুণিমা সিনহাকে কেন আত্মবিশ্বাস ও সাহসের অন্য এক নাম’ বলা হয়েছে, তা আলোচনা করো।

উত্তর : অরুণিমা অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে থাকার সময় মনে মনে সংকল্প করেছিল যে সে এভারেস্ট শৃঙ্গ আরোহণ করবে। হাসপাতাল থেকে বের হয়ে বাড়িতে না গিয়ে সোজা এভারেস্ট বিজয়ী বাচেন্দ্রী পালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করল। এর পর সে এভারেস্ট এক্সপিডিশান গ্রুপে যোগদান করল। তাঁর শারীরিক ও মানসিক দৃঢ়তার অভাব ছিল না। সে পা হারানোর দুর্ভাগ্যকে সৌভাগ্যে পরিণত করার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠল। প্রায় এক বছর কাল নাগাড়ে উৎসাহ উদ্যম অব্যাহত রেখে অনুশীলনে আত্মমগ্ন হযেছিল। পর্বতাভিযানে তার সাহায্যকারী শেরপা বলেছিল, রক্তভেজা পা নিয়ে যেন ফিরে যায়। কিন্তু কোনো বাধাবিপত্তির কাছে হার মানতে সে শেখে নি। এরূপ দৃঢ় মনোবল নিয়ে অরুণিমা এভারেস্ট বিজয়ের জন্য প্রস্তুত হযেছিল।


Rajesh Konwar

Author & Editor

Has laoreet percipitur ad. Vide interesset in mei, no his legimus verterem. Et nostrum imperdiet appellantur usu, mnesarchum referrentur id vim.

0 comments:

Post a Comment