“গৌরাঙ্গের বাল্যলীলা”
“গৌরাঙ্গের
বাল্যলীলা” কবি মুরারিগুপ্ত রচিত
এক
অনবদ্য
কাব্যাংশ যেখানে
শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর শৈশব
জীবনের
মধুর
চিত্র
ফুটে
উঠেছে।
কবি
তাঁর
কোমল
বয়সের
সরলতা,
নিষ্পাপতা এবং
ঈশ্বরত্বের আভাসকে
অত্যন্ত কাব্যিক ভাষায়
উপস্থাপন করেছেন। এই
কবিতায় গৌরাঙ্গ শিশুরূপে খেলা
করছেন,
কোল
চাইছেন,
হাসছেন
ও
কাঁদছেন—এইসব
আচরণের
মধ্যেও
লুকিয়ে আছে
এক
অলৌকিক
মহিমা।
✨
মুখ্য বিষয়:
- গৌরাঙ্গের
শিশুবেলার খেলা
- মায়ের প্রতি তার স্নেহ ও নির্ভরতা
- দেবত্বের
আভাস ও
ভবিষ্যৎ বার্তা
- মায়ের স্নেহময় অনুভব এবং গৌরাঙ্গের জয়ধ্বনি
ব্যাখ্যা:
এই কবিতায় গৌরাঙ্গকে সাধারণ এক শিশু হিসাবে দেখানো হলেও, তার প্রতিটি কাজেই ঈশ্বরের ইঙ্গিত আছে। তিনি যখন হাঁটতে চেষ্টা করেন, তখন পড়ে যান, মা শচী তখন ছুটে এসে তাঁকে কোলে তুলে নেন। এমন সময় কবি বলেন, "এ নহে কোলের ছেলে", অর্থাৎ গৌরাঙ্গ একজন সাধারণ শিশু নন – তিনি একজন মহাপুরুষ, এক দিব্য রূপ।
উপসংহার:
“গৌরাঙ্গের বাল্যলীলা” একটি কাব্যিক উপস্থাপনা যা শুধুমাত্র চৈতন্যদেবের শৈশবকে নয়, বরং তার ঈশ্বরত্বকেও তুলে ধরে। এই অধ্যায় ছাত্রছাত্রীদের জন্য শুধু পরীক্ষা নয়, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ।
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন ১: “গৌরাঙ্গের বাল্যলীলা” কবিতাটি কে রচনা করেছেন?
উত্তর: মুরারিগুপ্ত
প্রশ্ন ২: গৌরাঙ্গ কার নাম?
উত্তর: গৌরাঙ্গ হলেন
শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু
প্রশ্ন ৩: শিশুকালে গৌরাঙ্গ কীভাবে হাঁটতেন?
উত্তর: তিনি কোমর
দোলাতে
দোলাতে,
দুলে
দুলে
হাঁটতেন এবং
মাঝে
মাঝে
পড়ে
যেতেন।
প্রশ্ন ৪: গৌরাঙ্গের গলায় কী ছিল?
উত্তর: তাঁর গলায়
ছিল
বাঘনখ
প্রশ্ন ৫: ‘সহিতে কি পারে মায়’ – এর অর্থ কী?
উত্তর: শিশুর কষ্ট
দেখে
মা
সহ্য
করতে
পারেন
না
এবং
দ্রুত
কোলে
তুলে
নেন।
প্রশ্ন ৬: মায়ের কোল না পেয়ে গৌরাঙ্গ কী করতেন?
উত্তর: তিনি কাঁদতে
শুরু
করতেন
এবং
তার
কান্না
দেখে
মা
তাকে
কোলে
তুলে
নিতেন।
· প্রশ্ন:
“গৌরাঙ্গের বাল্যলীলা” কবিতার রচয়িতা কে?
উত্তর:
মুরারিগুপ্ত।
· প্রশ্ন:
গৌরাঙ্গ কে?
উত্তর:
শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু।
· প্রশ্ন:
গৌরাঙ্গের মাতার নাম কী?
উত্তর:
শচী।
· প্রশ্ন:
গৌরাঙ্গের গলায় কী ছিল?
উত্তর:
বাঘনখ।
· প্রশ্ন:
“এ নহে কোলের ছেলে” – এই উক্তি কার?
উত্তর:
মুরারিগুপ্ত।
· প্রশ্ন:
গৌরাঙ্গ কেমনভাবে হাঁটতেন?
উত্তর:
দুলে দুলে হাঁটতেন।
· প্রশ্ন:
গৌরাঙ্গ হাঁটতে গিয়ে কী করতেন?
উত্তর:
পড়ে যেতেন।
· প্রশ্ন:
গৌরাঙ্গ যখন কাঁদতেন, মা কী করতেন?
উত্তর:
কোলে তুলে নিতেন।
· প্রশ্ন:
গৌরাঙ্গ কোথায় হামাগুড়ি দিতেন?
উত্তর:
ঘরের মেঝেতে।
· প্রশ্ন:
“সহিতে কী পারে মায়”
– এখানে 'মায়' কার প্রতি নির্দেশ করে?
উত্তর:
মা শচীর প্রতি।
· প্রশ্ন:
গৌরাঙ্গ শিশুকালে কী পরতেন?
উত্তর:
শিশুদের সাধারণ পোশাক।
· প্রশ্ন:
গৌরাঙ্গের মুখে কী দেখা যায়?
উত্তর:
চন্দনের তিলক।
· প্রশ্ন:
গৌরাঙ্গের কান্না দেখে মা কী অনুভব
করতেন?
উত্তর:
কষ্ট।
· প্রশ্ন:
“হাসিয়া মুরারি বোলে” – এখানে ‘মুরারি’ কে?
উত্তর:
কবি মুরারিগুপ্ত।
· প্রশ্ন:
গৌরাঙ্গ কোন ধর্মের প্রচার করেন?
উত্তর:
বৈষ্ণব ধর্ম।
· প্রশ্ন:
গৌরাঙ্গের শৈশব কেমন ছিল?
উত্তর:
সরল ও মধুর।
· প্রশ্ন:
বাঘনখ কী দিয়ে তৈরি
হত?
উত্তর:
ধাতব পদার্থ (সাধারণত সোনা বা রূপা)।
· প্রশ্ন:
গৌরাঙ্গের জন্মস্থান কোথায়?
উত্তর:
নবদ্বীপ।
· প্রশ্ন:
গৌরাঙ্গের কান্না কেমন ছিল?
উত্তর:
আকুল।
· প্রশ্ন:
মায়ের কোলে উঠতে গৌরাঙ্গ কী করতেন?
উত্তর:
কাঁদতেন।
· প্রশ্ন:
‘দোলায় দোলায় চলে’ – এখানে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর:
দুলে দুলে হাঁটা।
· প্রশ্ন:
গৌরাঙ্গ যখন মাটিতে পড়ে যেতেন, তখন তাঁর মা কী করতেন?
উত্তর:
কোলে তুলে নিতেন।
· প্রশ্ন:
গৌরাঙ্গের শৈশবে ঈশ্বরত্বের কী লক্ষণ দেখা
যায়?
উত্তর:
অলৌকিক আচরণ।
· প্রশ্ন:
গৌরাঙ্গের নামের অর্থ কী?
উত্তর:
গৌরবর্ণ (উজ্জ্বল রং-এর অধিকারী)।
· প্রশ্ন:
কবিতাটির ভাষা কেমন?
উত্তর:
সহজ, সরল ও কাব্যিক।
· প্রশ্ন:
কবি মুরারির মতে গৌরাঙ্গ কেমন শিশু?
উত্তর:
অলৌকিক শিশু।
· প্রশ্ন:
গৌরাঙ্গের মুখে কী ছিল?
উত্তর:
তিলক।
· প্রশ্ন:
মা শচীর প্রতি গৌরাঙ্গের কেমন সম্পর্ক ছিল?
উত্তর:
গভীর স্নেহপূর্ণ।
· প্রশ্ন:
“এ নহে কোলের ছেলে” – এর মাধ্যমে কী
বোঝানো হয়েছে?
উত্তর:
গৌরাঙ্গ একজন ঈশ্বরের অবতার।
· প্রশ্ন:
‘গৌরাঙ্গ’ নামটি কেন দেওয়া হয়েছে?
উত্তর:
কারণ তাঁর গায়ের বর্ণ গৌর ছিল।
মুরারিগুপ্ত
মুরারিগুপ্ত ছিলেন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর একজন ঘনিষ্ঠ ভক্ত এবং জীবনীকার। তাঁর রচনায় চৈতন্যদেবের দৈবত্ব ও মানবিক দিক অনন্যভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
ক. বহু নির্বাচনী প্রশ্ন
১.
শ্রীচৈতন্যের ভক্তি
ও
তত্ত্বদর্শে প্রভাবিত বৈষ্ণব
পদাবলী
কোন
শতাব্দী থেকে
রচিত
হয়েছে?
ক. ১৫শ শতাব্দী
খ. ১৬শ শতাব্দী ✅
গ. ১৭শ শতাব্দী
ঘ. ১৮শ শতাব্দী
২.
'গৌরচন্দ্রিকা' কাকে
নিয়ে
রচিত?
ক. শ্রীকৃষ্ণ
খ. রাধা
গ. শ্রীচৈতন্য ✅
ঘ. মুরারি গুপ্ত
৩.
‘গৌরাঙ্গের বাল্যলীলা’ কবিতা
কাকে
নিয়ে
রচিত?
ক. শ্রীকৃষ্ণের
খ. রাধার
গ. চৈতন্যদেবের ✅
ঘ. বলরামের
৪.
বৈষ্ণব
পদকর্তারা গৌরচন্দ্রিকার মাধ্যমে কী
প্রকাশ
করেছেন?
ক. গীতার ভাব
খ. চৈতন্যদেবের অলৌকিক লীলা ✅
গ. রাধার বিদায়
ঘ. কৃষ্ণের যুদ্ধকলা
৫.
গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্ম কী
ভাষায়
প্রচারিত হয়েছিল?
ক. সংস্কৃত
খ. হিন্দি
গ. বাংলা ✅
ঘ. উর্দু
খ. সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর:
৬.
গৌরচন্দ্রিকা কী?
উত্তর: গৌরচন্দ্রিকা হল
শ্রীচৈতন্যদেবের অলৌকিক
লীলার
চিত্রণ,
যা
বৈষ্ণব
পদাবলীতে গান
বা
পদ
আকারে
স্থান
পেয়েছে।
৭.
‘গৌরাঙ্গের বাল্যলীলা’ কার
রচিত?
উত্তর: কবি মুরারি
গুপ্ত।
৮.
শ্রীচৈতন্যদেবকে কোথায়
কোথায়
শ্রীকৃষ্ণের অবতার
রূপে
পূজিত
হয়?
উত্তর: বাংলাদেশসহ বহু
জায়গায়।
৯.
চৈতন্যদেবের ভাবাবেগ বৈষ্ণব
পদে
কীভাবে
প্রতিফলিত হয়?
উত্তর: পদকারেরা তাঁর
ভাবাবেগ ও
কৃষ্ণভক্তিকে শ্রীরাধার মহাভাব-স্বরূপে রূপান্তর করে পদে তুলে
ধরেন।
১০.
কীর্তনের কোন
পর্যায়ে গৌরচন্দ্রিকা গাওয়া
হত
এবং
আজও
তার
রেওয়াজ রয়েছে
কেন?
উত্তর: কীর্তনের গোড়ার
দিকেই
গৌরচন্দ্রিকা গাওয়া
হত;
কারণ
বৈষ্ণব
ভক্তকবিরা চৈতন্যদেবকে স্মরণ
না
করে
কৃষ্ণলীলার গান
করতে
পারতেন
না।
এই
রেওয়াজ আজও
বজায়
আছে।
গ. ব্যাখ্যাসহ প্রশ্নোত্তর / রচনাধর্মী প্রশ্ন:
১১.
‘বৈষ্ণব পদাবলী বাংলা কাব্যসাহিত্যের অমূল্য সম্পদ’ — ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: বৈষ্ণব পদাবলীতে রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলা, ভক্তিরস ও
মানবিক
অনুভবের সূক্ষ্ম চিত্রণ
পাওয়া
যায়।
শ্রীচৈতন্যের প্রভাবে এই
পদগুলিতে ঈশ্বরভক্তির সাথে
গৌরাঙ্গদেবের ভাবাবেগ একীভূত
হয়েছে,
যা
বাংলা
কাব্যসাহিত্যকে এক
গভীরতা
ও
নান্দনিকতার শিখরে
পৌঁছে
দিয়েছে।
১২.
চৈতন্যদেব বাংলা সাহিত্যে কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন?
উত্তর: চৈতন্যদেব বাংলা
ভাষার
মাধ্যমে গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্ম প্রচার
করেছিলেন। তাঁর
জীবন
ও
লীলাকে
কেন্দ্র করে
অসংখ্য
চরিত
সাহিত্য রচিত
হয়েছে,
যা
বাংলা
সাহিত্যের ইতিহাস
ও
ভাববিচারে অনন্য।
১৩.
বৈষ্ণব পদকর্তারা কীভাবে পদাবলীতে নবত্ব এনেছিলেন?
উত্তর: চৈতন্যদেব জীবিত
থাকতেই
পদকর্তারা রাধাকৃষ্ণের পাশাপাশি গৌরাঙ্গদেবকে কেন্দ্র করে
পদ
রচনা
শুরু
করেন।
এতে
চৈতন্যদেবের কৃষ্ণভক্তি রাধার
মহাভাবের সাথে
মিশে
এক
নতুন
ভাবরস
সৃষ্টি
হয়,
যা
বাংলা
সাহিত্যে নতুন
ধারা
হিসেবে
স্থান
করে
নেয়।
১৪.
শ্রীচৈতন্যের জীবন ও লীলা চিত্রণের সাহিত্যিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব কী?
উত্তর: সাহিত্যিকভাবে, তাঁর
অলৌকিক
জীবন
বাংলা
সাহিত্যকে ভাবগম্ভীরতা ও
ভক্তিরসে সমৃদ্ধ
করেছে।
ঐতিহাসিকভাবে, চৈতন্যদেবের কর্ম
ও
ভাবধারা সমাজ
সংস্কার এবং
ধর্মীয় আন্দোলনের দিক
থেকে
গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন হিসেবে
বিবেচিত হয়।
১৫.
গৌরচন্দ্রিকা পদাবলীতে শ্রীরাধা ও চৈতন্যদেবের ভাবের মিল কোথায় দেখা যায়?
উত্তর: চৈতন্যদেবের কৃষ্ণের প্রতি
ভক্তি
ও
আবেগ
এমন
পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে,
পদকারেরা তাঁর
ভক্তির
মধে
শ্রীরাধার 'মহাভাব'
স্বরূপ
দেখেছেন। ফলে
পদাবলীতে শ্রীরাধার প্রেমাবেগ ও
চৈতন্যদেবের কৃষ্ণতৃষ্ণা একাকার
হয়ে
গেছে।
0 comments:
Post a Comment