সাগর সঙ্গমে নবকুমার
প্রশ্ন ১। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও:
(ক) নবকুমার কে?
উত্তর : নবকুমার হল সপ্তগ্রামের অধিবাসী এক ব্রাহ্মণ যুবক।
(খ) নবকুমার সঙ্গীগণ কর্তৃক পরিত্যক্ত হওয়ার প্রধান কারণ কী ছিল?
উত্তর: নদীতে জোয়ার আসাই
ছিল নবকুমারের সঙ্গীগণ কর্তৃক পরিত্যক্ত হওয়ার প্রধান কারণ।
(গ) নবকুমার নির্জন সমুদ্রতীরে বিজনে পরিত্যক্ত হল কেন?
উত্তরঃ নৌকাযাত্রীদের আহার কষ্ট নিবারণার্থে বিজন বনে রন্ধনের কাষ্ঠ সংগ্রহে গিয়ে নবকুমার নির্জন সমুদ্রতীরে পরিত্যক্ত হল।
(ঘ) ঘুম ভাঙার পর নবকুমার বহুদূরে কী দেখেছিল?
উত্তর: ঘুম ভাঙার পর নবকুমার বহুদুরে এক আলোকবিন্দু দেখেছিল।
(ঙ) কখন কাপালিকের সঙ্গে নবকুমারের সাক্ষাৎ হয়েছিল?
উত্তর: নবকুমার আলোকবিন্দুর সম্মুখবর্তী হওয়ার পর কাপালিকের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়েছিল।
(চ) পথিক, তুমি পথ হারাইয়াছ?’ উক্তিটি কার ?
উত্তর: ‘পথিক, তুমি পথ হারাইয়াছ?’ — উক্তিটি কপালকুণ্ডলার।
(ছ) কস্তম শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: কত্তম শব্দের অর্থ হল কে তুমি।
(জ) নবকুমার জাতিতে কী ছিল?
উত্তর: নবকুমার জাতিতে হিন্দু ব্রাহ্মণ ছিল।
(ঝ) নবকুমার পর্ণকুটিরে কী খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করেছিল?
উত্তর: নবকুমার পর্ণকুটিরে কাপালিক প্রদত্ত কিছু ফল ও জল খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করেছিল।
(ঞ) ‘এই কণ্ঠস্বরের সঙ্গে নবকুমারের হৃদয়ৰীণা বাজিয়া উঠিল।’ — এখানে কার কণ্ঠস্বরের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: অপূর্ব সুন্দরী রমণী কপালকুণ্ডলার কণ্ঠস্বর।
(ট) অস্পষ্ট সন্ধ্যালোকে কে নবকুমারকে পর্ণকুটিরের পথ দেখিয়ে নিয়ে যায়?
উত্তর: অস্পষ্ট সন্ধ্যালোকে কাপালিক নবকুমারকে পর্ণকুটিরের পথ দেখিয়ে নিয়ে যায়।
(ঠ) “কাপালিক মনুষ্য, আমিও মনুষ্য” উক্তিটি কার ?
উত্তর: কাপালিক মনুষ্য, আমিও মনুষ্য” —উক্তিটি নবকুমারের।
(ড) কাপালিকের পর্ণকুটিরে নবকুমার কী দেখেছিল?
উত্তর: কাপালিকের পর্ণকুটিরে নবকুমার কয়েকটি ব্যাঘ্রচর্ম, এক কলস জল ও কিছু ফল-মূল দেখেছিল।
(ঢ) কাপালিকের বয়স কত ছিল?
উত্তর: কাপালিকের বয়স প্রায় পঞ্চাশ বৎসর ছিল।
(ণ) প্রাতে উঠিয়া নবকুমার কী করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল?
উত্তর: প্রাতে উঠে নবকুমার সহজে বাড়ি ফেরার উপায় করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল।
(ত) ……. শিখরাসীন মনুষ্যমূর্তি আকাশপটস্থ চিত্রের ন্যায় দেখা যাইতেছে।’ —এই “মনুষ্যমূর্তিটি কার?
উত্তর: মনুষ্যমূর্তিটি জটাধারী কাপালিকের।
প্রশ্ন ২। সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও:
(ক) সাগর সংগমে নবকুমার পাঠটি কার লিখিত কোন গ্রন্থের অন্তর্গত?
উত্তর: সাগর সংগমে নবকুমার’ পাঠটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লিখিত কপালকুণ্ডলা গ্রন্থের অন্তর্গত।
(খ) ভৈরবী প্রেরিতোহসি’ – বক্তা কে? কাকে উদ্দেশ্য করে সে একথা বলেছে?
উত্তর: বক্তা কাপালিক। নবকুমারকে উদ্দেশ্য করে সে একথা বলেছে।
(গ) নবকুমার কোথায়, কীভাবে পরিত্যক্ত হয়েছিল?
উত্তর: নবকুমার নদীতীরবর্তী বিজন বনে তাঁর সঙ্গীগণ কর্তৃক পরিত্যক্ত হয়েছিল। সঙ্গীগণ নবকুমারকে জোয়ার আসার ভয়ে নদীতীরে পরিত্যাগ করেছিল।
(ঘ) – সবিস্ময়ে দেখিলা অদূরে, ভীষণ-দর্শন মূৰ্ত্তি।’ – ‘সাগর সঙ্গমে নবকুমার’ পাঠে উদ্ধৃত কবিতাংশটি কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর : ‘সাগর সংগমে নবকুমার’ পাঠে উদ্ধৃত কবিতাংশটি মেঘনাদবধ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
(ঙ), যে স্থানে সঙ্গীরা নবকুমারকে পরিত্যাগ করে চলে যান, সেখানকার বালিয়াড়ির সম্পর্কে যে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, তা সংক্ষেপে লিপিবদ্ধ করো।
উত্তর : যে স্থানে সঙ্গীরা নবকুমারকে পরিত্যাগ করেছিলেন সেখানে মনুষ্য বসতির চিহ্নমাত্র ছিল না। পুরো অঞ্চল
ছিল অরণ্যময়। অসমতল স্থানে কয়েক মাইল ব্যাপিয়া কেবল বালির স্তূপ ছিল। বালির স্তূপ আর কিছু উচু হলে বালুকাময় ছোট পর্বতশ্রেণীতে পরিণত হত বলেই লোকে এই
অঞ্চলকে বালিয়াড়ি বলে। মধ্যাহ্ন সূর্য কিরণে বালিয়াড়িকে অপূর্ব প্রভা বিশিষ্ট দেখায়। এখানে বড় গাছ জন্মায় না। স্তূপতলে সামান্য ক্ষুদ্র বন জন্মায়। শিরোভাগে ছায়াশূন্য ধবল শোভা বিরাজ করে। অধোভাগে ঝাটী, বন-ঝাউ এবং বনপুষ্পই অধিক দেখা যায়।
(চ) কীরূপ পরিস্থিতিতে নবকুমার বিজন বনে কী কারণে পরিত্যক্ত হয়েছিল ?
উত্তর: গঙ্গাসাগর থেকে তীর্থযাত্রীগণ ফিরে আসার সময় নদীতীরে দুদিনের ক্ষুধার জ্বালা দূর করার জন্য রান্না-বান্নার আয়োজন করতে গিয়ে দেখল যে পাকাদির কাঠ নেই। তখন নবকুমার এতজন লোকের আহার, তৃষ্ণা নিবারণের জন্য একাই কুঠার হাতে নদীর তীরবর্তী বিজন বনে রন্ধনের কাঠ সংগ্রহের জন্য যায়। সেখানে পাশে আহরণযোগ্য কোন কাঠ না পেয়ে একটু দূরে গিয়ে কাঠ সংগ্রহ করে তীরে আসতে তাঁর অল্প দেরী হয়। এদিকে জোয়ার আসায় তাঁর সঙ্গীগণ নবকুমারকে অনিচ্ছাবশতঃ নদীতীরে পরিত্যাগ করে চলে যায়।
(ছ) কাপালিককে নবকুমার কোথায় কী অবস্থায় দেখতে পায় তা লেখো।
উত্তর: সমুদ্রতীরে নবকুমার বিজন বনে সঙ্গীহীন অবস্থায় পরিত্যক্ত হয়ে হতাশ হয়ে পড়ে। নবকুমার চারদিকে অন্ধকার দেখতে পায়। লোকালয় নেই, আশ্রয় নেই, কোন আহার্য ও পানীয় নেই, তীব্র শীতের গাহবস্ত্র নেই। অবশেষে নবকুমার একটি বালিয়াড়ির পাশে পিঠ দিয়ে অবসন্ন অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়ে। গভীর রাতে নবকুমার অকস্মাৎ বহুদূরে এক আলোকবিন্দু দেখতে পেয়ে অদূরে লোকালয় আছে বলে অনুমান করে। পরে অল্প দূরে এগিয়ে দেখতে পায় ভীষণ দর্শন কাপালিক ধ্যানমগ্ন আছে।
(জ) এ কি দেবী—মানুষী — না কাপালিকের মায়ামাত্র। এখানে কার কথা বলা – হয়েছে? কে এইরূপ ভেবেছিলেন?
উত্তর : কপালকুণ্ডলার। নবকুমার।
(ঝ) নবকুমার কার সহায়তায় কেমন করে পুনরায় পর্ণকুটিরে পৌঁছতে পেরেছিল। নারীটি কে?
উত্তর: আগের দিন নবকুমার কাপালিকের সাথে অল্প সময়ের মধ্যে পর্ণকুটীরে প্রবেশ করে। পরে ক্ষুধার্ত নবকুমার কাপালিক প্রদত্ত কিছু ফল ও জল আহার করে অবসন্নতাবশতঃ নিদ্রামগ্ন হয়ে পড়ে।
পরের দিন প্রভাতে নবকুমার পর্ণকুটিরে কাপালিককে দেখতে পায় নি। সে সারাদিন অপেক্ষায় থাকল। অপরাহ্নে সমুদ্রতীরে বসে থাকার পর যখন পর্ণকুটিরে
যেতে চায় তখন সে অস্পষ্ট আলোকে পর্ণকুটিরের পথ হারিয়ে ফেলে। পরে অন্ধকারে এক অতি সুন্দরী রমণীর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। ঐ রমণী পথিককে পথ হারিয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করে নবকুমারকে পর্ণকুটিরে পৌঁছিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। নারীটি হলেন কাপালিকের পালিতা কন্যা কপালকুণ্ডলা।
0 comments:
Post a Comment