Sunday, 22 March 2020

বাংলা ব্যাকরন

বাংলা ভাষায় সাধারণত মূর্ধন্য - ণ ধ্বনির ব্যবহার নেই। সেজন্য বাংলা (দেশি), তদ্ভব ও বিদেশি শব্দের বানানে মূর্ধন্য - ণ বর্ণ লেখার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু বাংলা ভাষায় বহু তৎসম বা সংস্কৃত শব্দে মূর্ধন্য - ণ এবং দন্ত্য - ন এর ব্যবহার আছে। তা বাংলায় অবিকৃতভাবে রক্ষিত হয়। তৎসম শব্দের বানানে ণ - এর সঠিক ব্যবহারের নিয়মই ণত্ব বিধান।

বাংলা ব্যাকরন 
বাংলা ব্যাকরন
বাংলা ব্যাকরন  
বাংলা ব্যাকরন  ণত্ব ও ষত্ব বিধান 

বাংলা ভাষায় সাধারণত মূর্ধন্য - ণ ধ্বনির ব্যবহার নেই। সেজন্য বাংলা (দেশি), তদ্ভব ও বিদেশি শব্দের বানানে মূর্ধন্য - ণ বর্ণ লেখার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু বাংলা ভাষায় বহু তৎসম বা সংস্কৃত শব্দে মূর্ধন্য - ণ এবং দন্ত্য - ন এর ব্যবহার আছে। তা বাংলায় অবিকৃতভাবে রক্ষিত হয়। তৎসম শব্দের বানানে ণ - এর সঠিক ব্যবহারের নিয়মই ণত্ব বিধান।

ণ ব্যবহারের নিয়মঃ     
১। ট - বর্গীয় ধ্বনির আগে তৎসম শব্দে সব সময় মূর্ধন্য 'ণ' যুক্ত হয়। যেমন - ঘণ্টা, কাণ্ড।
২। ঋ, র, ষ - এর পরে মূর্ধন্য 'ণ' হয়। যেমন - ঋণ, তৃণ, বর্ণ, কারণ, ব্যাকরণ, ভীষণ ইত্যাদি।
৩। ঋ, র, ষ - এর পরে স্বরধ্বনি, ষ, য়, ব, হ, ং এবং ক -বর্গীয় ও প - বর্গীয় ধ্বনি থাকলে তার পরবর্তী 'ন' মূর্ধন্য 'ণ' হয়। যেমন - কৃপণ,  হরিণ। অর্পণ, লক্ষণ ইত্যাদি।
৪। কতকগুলো শব্দে স্বভাবতই 'ণ' হয়। যেমন - চাণক্য, মাণিক্য, বাণিজ্য লবণ, বীণা, গণনা ইত্যাদি।

সমাসবদ্ধ শব্দে সাধারণত ন-ত্ব বিধান খাটে না। এরূপ ক্ষেত্রে 'ন' হয়। যেমন - ত্রিনয়ন, সর্বনাম, দুর্নাম। ত -বর্গীয় বর্ণের সঙ্গে যুক্ত 'ন' কখনো 'ণ' হয় না, 'ন' হয়। যেমন - অন্ত, গ্রন্থ, ক্রন্দন।

 ২। ষ-ত্ব বিধানঃ
বাংলা ভাষায় সাধারণত মূর্ধন্য - ষ ধ্বনির ব্যবহার নেই। সেজন্য বাংলা (দেশি), তদ্ভব ও বিদেশি শব্দের বানানে মূর্ধন্য - ষ বর্ণ লেখার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু বাংলা ভাষায় বহু তৎসম বা সংস্কৃত শব্দে মূর্ধন্য - ষ এর ব্যবহার আছে। তা বাংলায় অবিকৃতভাবে রক্ষিত হয়। তৎসম শব্দের বানানে ষ - এর সঠিক ব্যবহারের নিয়মই ষত্ব বিধান।

ষ ব্যবহারের নিয়মঃ
১। অ, আ ভিন্ন অন্য স্বরধনি এবং ক ও র - এর পরে প্রত্যয়ের 'স' 'ষ' হয়। যেমন - ভবিষ্যৎ, মুমূর্ষু, চিকীর্ষা ইত্যাদি।
২। ই - কারান্তে এবং উ - কারান্তে উপসর্গের পর কতগুলো ধাতুতে 'ষ' হয়। যেমন - অভিসেক > অভিষেক, প্রতিসেধক > প্রতিষেধক, সুসমা > সুষমা ইত্যাদি।
৩। 'ঋ' কারের পর 'ষ' হয়। যেমন - ঋষি, কৃষক, দৃষ্টি, সৃষ্টি ইত্যাদি।
৪। তৎসম শব্দে 'র' - এর পর 'ষ' হয়। যেমন - বর্ষা, বর্ষণ।
৫। র- ধ্বনির পরে যদি অ, আ ভিন্ন অন্য স্বরধনি থাকে তবে তার পরে 'ষ' হয়। যেমন - পরিষ্কার। কিন্তু অ, আ স্বরধনি থাকলে 'স' হয়। যেমন - পুরস্কার।
৬। ট - বর্গীয় ধ্বনির সঙ্গে 'ষ' যুক্ত হয়। যেমন - কষ্ট, স্পষ্ট, নষ্ট, কাষ্ঠ, ওষ্ঠ ইত্যাদি।
৭। কতকগুলো শব্দে স্বভাবতই 'ষ' হয়। যেমন - ষড়ঋতু, রোষ, কোষ, আষাঢ়, ভাষণ, ভাষা, ঊষা, পৌষ, মানুষ ইত্যাদি।

জ্ঞাতব্য 
ক। আরবি, ফারসি, ইংরেজি ইত্যাদি বিদেশি ভাষা থেকে আগত শব্দে ষ হয় না। যেমন - জিনিস, পোশাক, মাস্টার, পোস্ট ইত্যাদি।
খ। সংস্কৃত 'সাৎ' প্রত্যয়যুক্ত পদেও ষ হয় না। যেমন - অগ্নিসাৎ, ধূলিসাৎ, ভূমিসাৎ ইত্যাদি। 

বাংলা ব্যাকরন 
বাক্য সংকোচন বা এক কথায় প্রকাশ

বাক্য সংকোচন করো ।

১। যা উড়ছে  উড়ন্ত বা উড্ডীয়মান ।

২। বরণের যোগ্য  বরেণ্য ।

৩। যা উদিত হচ্ছে  উদীয়মান ।

৪। যা চলছে  চলন্ত ।

৫। যা দর্শন করা উচিত  দ্রষ্টব্য ।

৬। যা বয়ে চলেছে  বহমান, বহতা ।

৭। জানবার ইচ্ছা  জিজ্ঞাসা ।

৮। পানের ইচ্ছা  পিপাসা ।

৯। যা ডুবছে  ডুবন্ত ।

১০। যে বা যারা যুদ্ধ করছে  যুধ্যমান ।

১১। যা পুনঃ পুনঃ জ্বলছে  জাজ্বল্যমান ।

১২। যা নিবারণ করা যায় না  অনিবার্য ।

১৩। কাঁদা যার স্বভাব  কাঁদুনে ।

১৪। যে বিমান চালায়  বৈমানিক ।

১৫। বালির সঙ্গে মিশ্রিত  বেলে ।

১৬। ভ্রিগুর অপত্য – ভার্গব ।

১৭। গঙ্গার সন্তান  গাঙ্গেয় ।

১৮। পেশা যার সাপ খেলানো  সাপুড়ে ।

১৯। যে জামাই ঘরে থাকে  ঘর-জামাই ।

২০। কপাল পোড়া যার  পোড়াকপাল ।

২১। যার পত্নী গত হয়েছে  বিপত্নীক ।

২২। যার নাম জানা নেই  অজ্ঞাতনামা ।

২৩। যার কুলশীল জানা যায় না  অজ্ঞাতকুলশীল

২৪। ময়ূরের ডাক  কেকা ।

২৫। যে নারীর পতি পুত্র কেউ নেই  অবীরা ।

২৬। যে হাজির নয়  গরহাজির ।

২৭। যেখানে যাওয়া কঠিন  দুর্গম ।

২৮। যে নারীর স্বামী আছে  সধবা ।

২৯। যাতে নুন নেই  আলুনি ।

৩০। যাতে সার পদার্থ নেই  অসার ।

৩১। বৃহৎ আকারের  বিপুলকায় ।

৩২। ছেলের বা মেয়ের মেয়ে সন্তান  নাতনি ।

৩৩। জানার জন্য বিশেষ আগ্রহ  কৌতূহল ।

৩৪। বর দান করেন যিনি  বরদ ।

৩৫। যে বস্তু চাওয়া হয়  ঈপ্সিত ।

৩৬। দশটি আনন যার  দশানন ।

৩৭। অশ্ব, রথ, হস্তী ও পদাতিকের মিলিত বাহিনী   -          চতুরঙ্গ ।

৩৮। এক মনুর শাসনকাল থেকে অন্য মনুর শাসনকালের আরম্ভ  মন্বন্তর ।

৩৯। যার বিনাশ নেই  অবিনাশ ।

৪০। পুণ্য কামনায় যেখানে বহুজনের সমাবেশ ঘটে -          তীর্থস্থান ।

৪১। ধাতু, পাথর ইত্যাদি দিয়ে মূর্তি বানায় যে -          ভাস্কর ।

৪২। যাহা মর্মকে বেদনা দেয়  মর্মান্তিক ।

৪৩। ভরনের যোগ্য ভৃত্য ।

৪৪। মহতের ভাব  মহত্ত্ব ।

৪৫। যার দয়া আছে  দয়ালু ।

৪৬। যে পরের উপকার করে  পরোপকারী ।

৪৭। চোখের কোণ  অপাঙ্গ ।

৪৮। যাহার দ্বিতীয় নাই  অদ্বিতীয় ।

৪৯। সাধ্যের অতীত  অসাধ্য ।

৫০। শৈশব হইতে  আশৈশব ।

৫১। সুপথ হইতে বিচলিত যিনি  উন্মার্গগামী ।

৫২। অন্য বিষয়ে মন যাহার  অনন্যমনা ।

৫৩। যাহার অন্য কোন সহায় নাই  অনন্যসহায়

৫৪। যাহা আসিবে  আগামী ।

৫৫। যাহা কর্ণ পর্যন্ত  আকর্ণ ।

৫৬। মাথার খুলি  করোঢী ।

৫৭। যাহা করিতে হইবে  কর্তব্য ।

৫৮। কোকিলের ডাক  কুহু ।

৫৯। কুৎসিত আকার যাহার  কদাকার ।

৬০। গৃহে থাকে যে  গৃহস্থ ।

৬১। ক্ষমা করিবার ইচ্ছা  তিতিক্ষা ।

৬২। বীণার ধ্বনি  ঝঙ্কার ।

৬৩। যিনি মহাকাব্য লিখিয়াছেন  মহাকবি ।

৬৪। দ্বারে থাকে যে  দৌবারিক, দ্বারী ।

৬৫। পিষ্ট দ্রব্যের গন্ধ  পরিমল ।

৬৬। বেদান্ত জানেন যিনি  বৈদান্তিক ।

৬৭। হস্তির শাবক  করভ ।

৬৮। মাসের দ্বিতীয় তারিখ  ২রা ।

৬৯। ঋষি দ্বারা উক্ত  প্রোক্ত ।

৭০। নিতান্ত দগ্ধ হয় যে সময়ে  নিদাঘ ।

৭১। নদী মাতা যাহার  নদীমাতৃক ।

৭২। পা দিয়া পান করা যে  পাদপ ।

৭৩। জয় করতে ইচ্ছুক  জিগীষু ।

৭৪। জানু পর্যন্ত লম্বিত  আজানুলম্বিত ।

৭৫। তল স্পর্শ করা যায় না যার  অতলস্পর্শী ।

৭৬। তীর ছোঁড়ে যে  তীরন্দাজ ।

৭৭। দিনে যে একবার আহার করে  একাহারী ।

৭৮। দীপ্তি পাচ্ছে যা  দীপ্যমান ।

৭৯। দুবার জন্মে যে  দ্বিজ ।

৮০। নষ্ট হওয়াই স্বভাব যার  নশ্বর ।

৮১। নৌকা দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করে যে  নাবিক ।

৮২। নিজেকে যে বড়ো মনে করে  হামবড়া ।

৮৩। নূপুরের ধ্বনি  নিক্বণ ।

৮৪। পা থেকে মাথা পর্যন্ত  আপাদমস্তক ।

৮৫। প্রিয় বাক্য বলে যে নারী  প্রিয়ংবদা ।

৮৬। পূর্বজন্ম স্মরণ করে যে  জাতিস্মর ।

৮৭। পান করার যোগ্য  পেয় ।

৮৮। পান করার ইচ্ছা  পিপাসা ।

৮৯। ফল পাকলে যে গাছ মরে যায়  ওষধি ।

৯০। বিদেশে থাকে যে  প্রবাসী ।

৯১। বিশ্বজনের হিতকর  বিশ্বজনীন ।

৯২। ব্যাকরণ জানেন যিনি  বৈয়াকরণ ।

৯৩। বিজ্ঞানের বিষয় নিয়ে গবেষণায় রত যিনি  বৈজ্ঞানিক ।

৯৪। বেদ-বেদান্ত জানেন যিনি  বৈদান্তিক ।

৯৫। বয়সে সবচেয়ে বড়ো যে  জ্যেষ্ঠ ।

৯৬। বয়সে সবচেয়ে ছোটো যে  কনিষ্ঠ ।

৯৭। ভোজন করার ইচ্ছা  বুভুক্ষা ।

৯৮। মৃতের মত অবস্থা যার  মুমূর্ষু ।

৯৯। মুষ্টি দিয়ে যা পরিমাপ করা যায়  মুষ্টিমেয় ।

১০০। মৃত্তিকা দ্বারা নির্মিত  মৃন্ময় ।

১০১। মর্মকে পীড়া দেয় যা  মর্মন্তুদ ।

১০২। মাটি ভেদ করে ওঠে যা  উদ্ভিদ ।

১০৩। মৃত গবাদি পশু ফেলা হয় যেখানে  ভাগাড় ।

১০৪। মন হরণ করে যা  মনোহর ।

১০৫। মন হরণ করে যে নারী  মনোহারিণী ।

১০৬। যা দমন করা যায় না  অদম্য ।

১০৭। যা দমন করা কষ্টকর  দুর্দমনীয় ।

১০৮। যা নিবারণ করা কষ্টকর  দুর্নিবার ।

১০৯। যা পূর্বে ছিল এখন নেই  ভূতপূর্ব ।

১১০। যা বালকের মধ্যেই সুলভ  বালকসুলভ ।

১১১। যা বিনা যত্নে লাভ করা গিয়েছে  অযত্নলব্ধ ।

১১২। যা ঘুমিয়ে আছে  সুপ্ত ।

১১৩। যা বার বার দুলছে  দোদুল্যমান ।

১১৪। যা দীপ্তি পাচ্ছে  দেদীপ্যমান ।

১১৫। যা সাধারণের মধ্যে দেখা যায় না  অনন্যসাধারণ ।

১১৬। যা পূর্বে দেখা যায় নি  অদৃষ্টপূর্ব ।

১১৭। যা কষ্টে জয় করা যায়  দুর্জয় ।

১১৮। যা কষ্টে লাভ করা যায়  দুর্লভ ।

১১৯। যা অধ্যয়ন করা হয়েছে  অধীত ।

১২০। যা অনেক কষ্টে অধ্যয়ন করা যায়  দুরধ্যয় ।

১২১। যা জলে চরে  জলচর ।

১২২। যা স্থলে চরে  স্থলচর ।

১২৩। যা জলে ও স্থলে চরে  উভচর ।

১২৪। যা বলা হয় নি  অনুক্ত ।

১২৫। যা কখনো নষ্ট হয় না  অবিনশ্বর ।

১২৬। যা মর্ম স্পর্শ করে  মর্মস্পর্শী ।

১২৭। যা বলার যোগ্য নয়  অকথ্য ।

১২৮। যার বংশ পরিচয় এবং স্বভাব কেউই জানে না – অজ্ঞাতকুলশীল ।

১২৯। যা চিন্তা করা যায় না  অচিন্তনীয় / অচিন্ত্য ।

১৩০। যা কোথাও উঁচু কোথাও নিচু  বন্ধুর ।

১৩১। যা সম্পন্ন করতে বহু ব্যয় হয়  ব্যয়বহুল ।

১৩২। যা খুব শীতল বা উষ্ণ নয়  নাতিশীতোষ্ণ ।

১৩৩। যার বিশেষ খ্যাতি আছে  বিখ্যাত ।

১৩৪। যা আঘাত পায় নি  অনাহত ।

১৩৫। যা উদিত হচ্ছে  উদীয়মান ।

১৩৬। যা ক্রমশ বর্ধিত হচ্ছে  বর্ধিষ্ণু ।

১৩৭। যা পূর্বে শোনা যায় নি  অশ্রুতপূর্ব ।

১৩৮। যা সহজে ভাঙ্গে  ভঙ্গুর ।

১৩৯। যা সহজে জীর্ণ হয়  সুপাচ্য ।

১৪০। যা খাওয়ার যোগ্য  খাদ্য ।

১৪১। যা চিবিয়ে খেতে হয়  চর্ব্য ।

১৪২। যা চর্বণ করে খেতে হয়  চর্ব্য ।

১৪৩। যা চুষে খেতে হয়  চোষ্য ।

১৪৪। যা লেহন করে খেতে হয়  লেহ্য ।

১৪৫। যা লেহন করার যোগ্য  লেহ্য ।

১৪৬। যা পান করতে হয়  পেয় ।

১৪৭। যা পান করার যোগ্য  পেয় ।

১৪৮। যা পানের অযোগ্য  অপেয় ।

১৪৯। যা বপন করা হয়েছে  উপ্ত ।

১৫০। যা বলা হয়েছে  উক্ত ।

১৫১। যার অন্য উপায় নেই  অনন্যোপায় ।

১৫২। যার কোন উপায় নেই  নিরুপায় ।

১৫৩। যার উপস্থিত বুদ্ধি আছে  প্রত্যুৎপন্নমতি ।

১৫৪। যার সর্বস্ব হারিয়ে গেছে  সর্বহারা / হৃতসর্বস্ব ।

১৫৫। যার কোনো কিছু থেকেই ভয় নেই  অকুতোভয় ।

১৫৬। যার আকার কুৎসিত  কদাকার ।

১৫৭। যার কোনো শত্রু নেই  অজাতশত্রু ।

১৫৮। যার কোনো শত্রু জন্মেনি  অজাতশত্রু ।  

১৫৯। যার দাড়ি জন্মে নি  অজাতশ্মশ্রু ।

১৬০। যার শ্মশ্রু জন্মে নি - অজাতশ্মশ্রু ।

১৬১। যার কিছু নেই  অকিঞ্চন


বাংলা ব্যাকরন 
সন্ধি  
বাংলা ও তৎসম সন্ধি
বাংলা ও তৎসম সন্ধি 

সন্নিহিত দুটি ধ্বনির মিলনের নাম সন্ধি। যেমন - আশা + অতীত = আশাতীত ।

সন্ধির উদ্দেশ্য  

১। সন্ধির উদ্দেশ্য স্বাভাবিক উচ্চারণে সহজপ্রবণতা
২। ধ্বনিগত মাধুর্য সম্পাদন।

বাংলা শব্দের সন্ধি    

বাংলা সন্ধি দুই রকমের - স্বরসন্ধি ও ব্যঞ্জনসন্ধি।

স্বরসন্ধি  

স্বরধ্বনির সঙ্গে স্বরধ্বনি মিলে যে সন্ধি হয় তাকে স্বরসন্ধি বলে।   
১। সন্ধিতে দুটি সন্নিহিত স্বরের একটির লোপ হয়। যেমন -
(ক) অ + এ = এ (অ লোপ) যেমন - শত + এক = শতেক।
(খ) আ + আ = আ (একটি আ লোপ) যেমন - রূপা + আলি = রূপালি।
(গ) আ + উ = উ (আ লোপ) যেমন - মিথ্যা + উক = মিথ্যুক।
(ঘ) ই + এ = ই (এ লোপ) যেমন - ধনি + এক = ধনিক।

২। কোন কোন স্থলে পাশাপাশি দুটি স্বরের শেষেরটি লোপ পায়। যেমন - যা + ইচ্ছা + তাই = যাচ্ছেতাই। এখানে (আ + ই) এর মধ্যে ই লোপ পেয়েছে। 

 ব্যঞ্জনসন্ধি 

স্বরে আর ব্যঞ্জনে, ব্যঞ্জনে আর ব্যঞ্জনে এবং ব্যঞ্জন আর স্বরে মিলিত হয়ে যে সন্ধি হয় তাকে ব্যঞ্জন সন্ধি বলে।

১। প্রথম ধ্বনি অঘোষ এবং পরবর্তী ধ্বনি ঘোষ হলে, দুটি মিলে ঘোষ ধনি দ্বিত্ব হয়। যেমন - ছোট + দা = ছোড়দা।
২। হলন্ত  র্ ধ্বনির পরে অন্য ব্যঞ্জন ধ্বনি থাকলে  র্ লুপ্ত হয়ে পরবর্তী ধ্বনি দ্বিত্ব হয়। যেমন - আর্ + না = আন্না।
 ৩। চ - বর্গীয় ধ্বনির আগে যদি ট - বর্গীয় ধ্বনি আসে তাহলে, ত - বর্গীয় ধ্বনি লোপ হয় এবং চ - বর্গীয় ধ্বনির দ্বিত্ব হয়। যেমন - নাত + জামাই = নাজ্জামাই ।
৪। 'প' এর পরে 'চ' এবং 'স' - এর পরে 'ত' এলে চ ও ত এর স্থলে শ হয়। যেমন - পাঁচ + শ = পাশ্ শ।
৫। হলন্ত ধ্বনির সাথে স্বরধ্বনি যুক্ত হলে স্বরের লোপ হয় না। যেমন - বোন + আই = বোনাই, তিল + এক = তিলেক।
৬। স্বরধ্বনির পরে ব্যঞ্জনধ্বনি এলে স্বরধ্বনিটি লুপ্ত হয়। যেমন - কাঁচা + কলা = কাঁচকলা।

 তৎসম শব্দের সন্ধি 

বাংলা ভাষায় বহু সংস্কৃত শব্দ অবিকৃত অবস্থায় রয়েছে। এসব শব্দই তৎসম (তৎ = তার + সম = সমান) । তার সমান অর্থাৎ সংস্কৃতের সমান। এ শ্রেণির শব্দের সন্ধি সংস্কৃত ভাষার নিয়মেই সম্পাদিত হয়।  বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত তৎসম সন্ধি তিন প্রকারঃ ১। স্বরসন্ধি ২। ব্যঞ্জন সন্ধি ৩। বিসর্গ সন্ধি।

স্বরসন্ধি   
স্বরধ্বনির সঙ্গে স্বরধ্বনির মিলনের নাম স্বরসন্ধি।

ক। অ -কার কিংবা আ - কারের পর অ - কার থাকলে উভয়ে মিলে আ - কার হয়, আ - কার পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের সঙ্গে যুক্ত হয়। যেমন - 
অ + অ = আ    নর + অধম = নরাধম।
অ + আ = আ   হিম + আলয় = হিমালয়।
আ + অ = আ   যথা + অর্থ = যথার্থ।
আ + আ = আ   বিদ্যা + আলয় = বিদ্যালয়। 

খ। অ - কার কিংবা আ - কারের পর ই - কার কিংবা ঈ - কার থাকলে উভয়ে মিলে এ - কার হয়; এ - কার পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের সঙ্গে যুক্ত হয়।
অ + ই = এ   শুভ + ইচ্ছা = শুভেচ্ছা।
আ + ই = এ   যথা + ইষ্ট = যথেষ্ট।
অ + ঈ = এ   পরম + ঈশ = পরমেশ।
আ + ঈ = এ   মহা + ঈশ = মহেশ।

৩। অ - কার কিংবা আ - কারের পর উ - কার কিংবা ঊ - কার থাকলে উভয়ে মিলে  ও - কার হয়; ও - কার পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের সঙ্গে যুক্ত হয়।
অ + উ = ও   সূর্য + উদয় = সূর্যোদয়।
আ + উ = ও   যথা + উচিত = যথোচিত।
অ + ঊ = ও   গৃহ +  ঊর্ধ্ব = গৃহোর্ধ্ব ।
আ + ঊ = ও   গঙ্গা + ঊর্মি = গঙ্গোর্মি।

৪। অ - কার পর কিংবা আ - কারের পর ঋ - কার থাকলে উভয়ে মিলে 'অর' হয় এবং টা 'রেফ' রূপে পরবর্তী বর্ণের সাথে লেখা হয়।
অ + ঋ = অর্   দেব + ঋষি = দেবর্ষি।
আ + ঋ = অর্   মহা + ঋষি = মহর্ষি।

৫। অ - কার কিংবা আ - কারের পর 'ঋত' - শব্দ থাকলে (অ, আ + ঋ) উভয় মিলে 'আর' হয় এবং বানানে পূর্ববর্তী বর্ণে 'আ' এবং পরবর্তী বর্ণে 'রেফ' লেখা হয়। 
অ + ঋ = আর   শীত + ঋত = শীতার্ত।
আ + ঋ = আর   তৃষ্ণা + ঋত = তৃষ্ণার্ত।

৬। অ - কার কিংবা আ - কারের পর এ - কার কিংবা ঐ - কার থাকলে উভয়ে মিলে ঐ - কার হয়; ঐ - কার পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের সাথে যুক্ত হয়।
অ + এ = ঐ   জন + এক = জনৈক।
আ + এ = ঐ   সদা + এব = সদৈব।
অ + ঐ = ঐ   মত + ঐক্য = মতৈক্য। 
আ + ঐ = ঐ   মহা + ঐশ্বর্য = মহৈশ্বর্য।

৭। অ - কার কিংবা আ - কারের পর ও - কার কিংবা ঔ - কার থাকলে উভয়ে মিলে ঔ - কার হয়; ঔ - কার পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের সাথে যুক্ত হয়। 
অ + ও = ঔ   বন + ওষধি = বনৌষধি।
আ + ও = ঔ   মহা + ওষধি = মহৌষধি।
অ + ঔ = ঔ   পরম + ঔষধ = পরমৌষধ।
আ + ঔ = ঔ   মহা + ঔষধ = মহৌষধ।

৮। ই - কার কিংবা ঈ - কারের পর ই -কার কিংবা ঈ - কার থাকলে উভয়ে মিলে ঈ -কার হয়। ঈ - কার পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের সাথে যুক্ত হয়।
ই + ই = ঈ   অতি + ইত = অতীত।
ই + ঈ = ঈ   পরি + ঈক্ষা = পরীক্ষা।
ঈ + ই = ঈ   সতী + ইন্দ্র = সতীন্দ্র।
ঈ + ঈ = ঈ   সতী + ঈশ = সতীশ।

৯। ই - কার কিংবা ঈ - কারের পর ই ও ঈ ভিন্ন অন্য স্বর ই বা ঈ স্থানে 'য' বা 'য ( ্য ) ফলা হয়। য - ফলা লেখার সময় পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের সাথে লেখা হয়। 
ই + অ = য্ + অ      অতি + অন্ত = অত্যন্ত।
ই + আ = য্ + আ    ইতি  + আদি = ইত্যাদি।
ই + উ = য্ + উ        অতি + উক্তি = অত্যুক্তি।
ই + ঊ = য্ + ঊ       প্রতি + ঊষ = প্রত্যূষ।
ঈ + আ = য্ + আ   মসী + আধার = মস্যাধার।
ই + এ = য্ + এ        প্রতি + এক = প্রত্যেক।
ঈ + অ = য্ + অ     নদী + অম্বু = নদ্যম্বু।

১০। উ - কার কিংবা ঊ - কারের পর উ - কার বা ঊ - কার থাকলে উভয়ে মিলে ঊ - কার হয়। ঊ - কার পূর্ববর্তী ব্যঞ্জন ধ্বনির সাথে যুক্ত হয়।
উ + উ = ঊ       মরু + উদ্যান = মরূদ্যান।
উ + ঊ = ঊ       বহু + ঊর্ধ্ব = বহূর্ধ্ব।
ঊ + উ = ঊ      বধূ + উৎসব = বধূৎসব।
ঊ + ঊ = ঊ      ভূ + ঊর্ধ্ব = ভূর্ধ্ব। 

Rajesh Konwar

Author & Editor

Has laoreet percipitur ad. Vide interesset in mei, no his legimus verterem. Et nostrum imperdiet appellantur usu, mnesarchum referrentur id vim.

0 comments:

Post a Comment